Logo
শিরোনাম:
নিরাপদে চলাচলের জন্য গাজীপুরের শহরে রেলক্রসিং ফুটওভারব্রীজ,শহরের রাস্থা মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন। গাজীপুর অপরাধমুক্ত ও বসবাসযোগ্য শহর গড়তে মতবিনিময় জিএমপি কমিশনার। গাজীপুর সিটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমানকে ভারতে পালানোর সময় গ্রেফতার। গাজীপুর বাংলাবাজার এলাকায় মোটরসাইকেল-অটোরিকশার সংঘর্ষে কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন বকেয়া বেতনের দাবিতে ৬০ ঘন্টা পেরিল শ্রমিক অবরোধ। ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান ন্যাশনাল পার্ক এ তিন নাম্বার গেটের সামনে মানববন্ধন করেছে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকগণ। গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ডে স্কুল বসত ঘর পুড়ে ছাই। কক্সবাজার হোটেল থেকে যুবলীগ নেতা এসএম আলমগীর গ্রেফতার। ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও গুলির ঘটনায় ৩১নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আলমাস মোল্লা আটক। গাজীপুর চৌরাস্তা বিক্রমপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার এর ভেজাল মেয়াদউত্তীর্ণ খাবার এর বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

শিশুদের অংশগ্রহণে আবাদ হোক মসজিদ

সুন্দর ও অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে শিশুদের মসজিদে গমন খুবই জরুরি। শিশুদের অনেকে মসজিদে আসতে চায়, কিন্তু অভিভাবক শিশুকে মসজিদ নিয়ে আসা থেকে বেঁচে থাকতে মিথ্যাসহ নানা অজুহাত দাঁড় করায়। যা কোনোভাবেই উচিত নয়, বরং শিশুর মসজিদে আসা এবং শিশুদের অংশগ্রহণে মসজিদ আবাদ হলে জাতি পাবে সুন্দর ও অপরাধমুক্ত সমাজ।

মসজিদে শিশুদের নিয়ে এলে অনেক মুসল্লিই বিরক্ত হয়। আবার অনেকে শিশুদের নামাজের কাতার থেকে বের পেছনে পাঠিয়ে দেয়। যা ঠিক নয় বরং সুন্নাতের সরাসরি বিরোধী।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবন থেকেই মুসলিম উম্মাহর এ শিক্ষা নেয়া জরুরি যে, তিনি মসজিদে শিশুদের নিয়ে আসতেন কিনা। কিংবা নামাজ পড়াকালীন সময়ে তিনি শিশুদের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছেন। আর তাতেই রয়েছে সুন্দর উত্তর।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রিয় নাতি হজরত ইমাম হাসান ও হুসাইন নামাজ চলাকালীন সময়ে সেজদায় গেলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাধে চড়তেন। যে কারণে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক সময় সেজদায় অনেক সময় ব্যয় করতেন। কখনও নাতিদের সঙ্গে রাগ বা খারাপ আচরণ করেননি।

বাচ্চা বা শিশুদের মসজিদমুখী করতে দেশে ও দেশের বাইরে নানা আয়োজনের খবর পাওয়া যায়। কোথাও মসজিদে গাছের বাগান করেছেন কোনো ইমাম। এক একটি গাছের টবে এক একজন বাচ্চা বা শিশুর নাম লিখে সে গাছের তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব দিয়েছেন সেই শিশুকে। ফলে সে মসজিদে আসবে আবার কুরআন শিখবে পাশাপাশি হবে নিয়মিত নামাজি। তার থেকে খারাপ বা বদ স্বভাব দূর হয়ে যাবে।

আবার ভারতে গত কিছুদিন আগে একাধারে ৪০ দিন নামাজের জামাআতে অংশগ্রহণকারীদের জন্য নতুন সাইকেল উপহার দেয়ার আয়োজন হয়েছিল। কারণ যে বা যারা নিয়মিত ৪০ দিন মসজিদে নামাজের জামাআতে অংশগ্রহণ করবে তাদের মাঝে নামাজের একটা অভ্যাস তৈরি হয়ে যাবে। অন্যায় ও অপরাধমুক্ত মনও তৈরি হয়ে যাবে।

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের নোয়াখালীর এক মসজিদের ইমাম জুমআর নামাজে ঘোষণা করলেন, ’১২ বছরের নিচে যত বাচ্চা মসজিদে আসবে প্রত্যেক ওয়াক্তে তাদের জন্য থাকবে ২টি করে চকলেট। আবার যারা নিয়মিত আসবে তাদের জন্য থাকবে সপ্তাহিক পুরস্কার। যা প্রতি বৃহস্পতিবার বাদ ইশা ঘোষণা করা হবে।’

বাচ্চাদের মসজিদমুখী করে নামাজি ও অপরাধমুক্ত সুন্দর জীবন গঠনে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন এ ইমাম। যদিও ভেবেছিলাম হয়তো এ আহ্বানে তেমন সাড়া পাবো না।

আল্লাহর তাআলার শুকরিয়া, ইমামের এ ঘোষণায় এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ যেতে না যেতেই মসজিদে শিশুদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি চকলেট (৫৮) পাওয়া ৮ বছরের শিশু সালেহকে সাপ্তাহিক পুরস্কার হিসেবে জ্যামিতি বক্স দিয়েছেন মসজিদে এ ইমাম।

বাচ্চাদের উদ্দেশ্যে মসজিদে ইমাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘শুধু নামাজ পড়ার জন্যই নয়, বরং মসজিদে নামাজ পড়ার পর তারা খেলবে, দৌড়াদৌড়ি করবে, আনন্দ করবে।’

ইমামের এ ঘোষণায় স্থানীয় কিছু মুসল্লি রেগে গেলেন আবার কেউ কেউ মারাত্মক বিরক্তি প্রকাশ করলেন। এ ব্যাপারে মসজিদের ইমামের ঘোষণা-

‘শিশুদের যারা সহ্য করতে পারবে না, তারা চাইলে অন্য মসজিদে চলে যেতে পারেন। আর যারা রেগে যাবেন তাদের নয়, যারা ধৈর্যশীল মুসল্লি, আমি শুধু তাদের ও শিশুদের ইমামতি করবো।’

কারণ শিশুরা ছোট থেকে নামাজে অভ্যস্ত হলে মসজিদ কখনো মুসল্লি শূন্য হবে না। যারা এখন শিশু, কম-বেশি দুষ্টুমি করলেও বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে। তাদের বুঝানো এবং নামাজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

শুধু ছেলে শিশুরাই নয়, মেয়ে শিশুরাও বাবা-ভাইয়ের সঙ্গে মসজিদে আসা শুরু করে। এরই মধ্যে ৬ বছরের এক মেয়ে শিশু সবচেয়ে বেশি মসজিদে এসে চকলেটসহ সপ্তাহিক পুরস্কার হিসেবে পেয়েছেন অ্যালার্ম ঘড়ি।

দেশের প্রতিটি মসজিদে শিশুদের অংশগ্রহণ বাড়লে, শিশুদের দ্বারা মসজিদ আবাদ হলে কমে যাবে অপরাধ প্রবণতা। কুরআনের আলোয় আলোকিত হবে ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও দেশ।

সে কারণে মসজিদে শিশুদের নিয়ে আসা অভিভাবক ও বড়দের নৈতিক ও ঈমানি দায়িত্ব। সে আলোকে মসজিদ চত্বরে শিশুদের জন্য বিনোদনমূলক পার্ক বা জায়গাসহ খেলার সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। যা শিশুদের নৈতিক, মানসিক ও আত্মিক শিক্ষার পাশাপাশি সত্য ও সুন্দরের দিকে পারিচালিত করবে।

আজকের শিশুই আগামী দিনের মসজিদের নামাজের জামাআতে সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে কাতারবন্দি হয়ে নামাজ আদায় করবে। সুন্দর, শান্তি ও নিরাপত্তার সুবাতাবাস বইবে সমাজ ও রাষ্ট্রে। আর তাদের পরকালও হবে সুন্দর।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


Theme Created By Raytahost
error: এই সাইটের নিউজ কপি করা বেআইনী !!