ঐতিহাসিক বন্ধু ও ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে উত্তেজনা নয়, শান্তি বিরাজ করুক- এটাই বাংলাদেশের একমাত্র চাওয়া। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে বাংলাদেশের কোনো উদ্বেগ আছে কি-না? জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ভারত একটি বড় সরকার। ভারতে যদি উত্তেজনা-বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, তাহলে আশপাশেও এর কিছুটা প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, সে জন্য আমরা চাই যে, ভারত বা বিভিন্ন বড় বড় দেশ, যেমন আমেরিকায় যদি মন্দা দেখা দেয় তাতে আমাদেরও কষ্ট হয়। পৃথিবীর এইসব বিষয় মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত আছি। কেননা কোথাও কোন সমস্যা হলে তার ফল-আউট আমাদের এখানেও হয়। আমরা চাই যে, সারা ভারতবর্ষে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং কোনো ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হবে না। যেন আমাদের অসুবিধায় পড়তে না হয়। বেইজিং ঘোষণার ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রী। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বুধবারের পূর্বনির্ধারিত বৈঠক স্থগিত হওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জেআরসির বৈঠক বাতিলের সঙ্গে ভারতের জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন-এনআরসির কোনো সম্পর্ক নেই। মন্ত্রী বৈঠক বাতিলের জন্য ঢাকার প্রস্তুতির ঘাটতির বিষয়টি সামনে আনেন। বলেন, যখন আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত হবো, তখনই বৈঠকটি হবে। সঠিকভাবে প্রস্তুত না হলে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। কিন্তু পরে মনে হয়েছে কোথাও কোথাও দুর্বলতা আছে। এ জন্য ভারতের সঙ্গে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে বৈঠকটি স্থগিত করেছে ঢাকা। আরও হোমওয়ার্কের পর স্থগিত বৈঠকের সময়ক্ষণ নির্ধারণ হবে বলেও জানান মন্ত্রী। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, মিডিয়ায় আমরা শুনছি কিছু বাংলাদেশি ভারত থেকে পুশ করা হচ্ছে। আমরা সেটা ভারত সরকারকে জিজ্ঞেস করেছি। দিল্লি আমাদের বলেছে- তারা কাউকে পুশ করছে না। ভারত সরকারকে আমরা বলেছি, কোন অবৈধ বাংলাদেশি যদি থেকে থাকে আমাদের জানাবেন, আমরা যাচাই-বাছাই করে স্ট্যান্ডার্ড প্রক্রিয়া অনুসারে অবশ্যই তাদের ফেরাবো। রাজাকার তালিকা নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে বিদেশে বাংলাদেশের ভারমূর্তি প্রশ্নের মুখে পড়বে কি-না? এমন প্রশ্নও আসে। ড. মোমেন তার সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, এ তালিকা আরও আগে হলে ভালো হতো। কিন্তু ’৭৫-এর পরে যে সরকারগুলো ছিল তারা এটি করেনি। সম্প্রতি যে তালিকা করা হয়েছে তাতে কিছুটা দুর্বলতা রয়েছে, সেটা সংশোধন হবে। তালিকা তৈরির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান মন্ত্রী। এর আগে অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে ড. মোমেন বলেন, ২০২০ সাল হবে নারীর ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ বছর। ২০২০ সালে বেইজিং ঘোষণা ও কর্মপরিকল্পনার ২৫ বছর পূর্ণ হবে। ১৯৯৫ সালে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে জাতিসংঘ আয়োজিত চতুর্থ বিশ্ব নারী সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ড. ফাওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান।