মিয়ানমারকে আবারও দেশটির নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণকারি দেশের তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল আর পম্পেও ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রনীতিতে সকল দেশের নাগরিকের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়। ধর্মীয় কারণে কিংবা জাতিগত বিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে কাউকে অযথা নিগৃহীত, হয়রানি অথবা দেশ ত্যাগে বাধ্য করার মত কোন আচরণকেই যুক্তরাষ্ট্র বরদাশত করতে পারে না। প্রতিটি দেশ এবং অঞ্চলের মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর যুক্তরাষ্ট্র এবং এ কারণে যারা দমন-পীড়নে লিপ্ত তাদেরকে নিয়ন্ত্রণেও অঙ্গিকারাবদ্ধ। সে আলোকেই বার্মা তথা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর বর্বরতার ঘটনাবলিকে ‘বিশেষভাবে উদ্বেগজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে চীন, ইরিত্রিয়া, ইরান, নর্থ কোরিয়া, পাকিস্তান, সউদি আরব, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের মত।
মিয়ানমার সরকারের আচরণে গোটাবিশ্বের সভ্য সমাজ উদ্বিগ্ন বলেও মন্তব্য করা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে মিয়ানমার ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি অপ্রাপ্ত বয়স্ক তরুণীসহ নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছে। নিরস্ত্র মানুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। সবকিছুই চলছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে ১৮ ডিসেম্বর। সেখানে উপরক্তে দেশগুলোতে ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণের জঘন্য ঘটনাবলি ছাড়াও কমরোস, রাশিয়া এবং উজবেকিস্তানকে ‘বিশেষ ওয়াচ লিস্ট’র আওতায় আনা হয়েছে। সে তালিকায় এবার নতুন করে যোগ করা হয়েছে কিউবা, নিকারাগুয়া, নাইজেরিয়া এবং সুদানকে।
চলতি মাসেই মার্কিন প্রশাসন ৯টি দেশের ৬৮ ব্যক্তি এবং কয়েকটি সংস্থাকে চিহ্নিত করেছে। গ্লোবাল ম্যাগনিটস্কি আইনের আওতায় দুর্নীতিবাজ এবং মানবাধিকার হরণকারি হিসেবে করা এই তালিকায় বার্মা তথা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ৪ শীর্ষ কর্মকর্তার নামও রয়েছে। তারা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে নিধনের ষড়যন্ত্রে সরাসরি জড়িত বলে সরেজমিন তদন্তে জানতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ধর্ম এবং জাতিগত বিশ্বাসের কারণে যে সব দেশ বর্বরতা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এ্যাকশন অব্যাহত থাকবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে উল্লেখ করেছেন।