হযরত শাহ্ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের একটি গার্ডার ধসে পড়ায় অন্তত ৬ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই চীনা নাগরিকও রয়েছে। রবিবার সকাল ১০টার পর এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাসেল শিকদার বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমরা খবর পেয়েছি গার্ডার ভেঙে কয়েকজন আহত হয়েছে। বর্তমানে তাদের কী অবস্থা তা বিস্তারিত বলতে পারছি না। বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাদন ফকির বলেন, আহতদের মধ্যে দুই চীনা নাগরিক রয়েছে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাত্র ১৩ দিন আগে সরকারী দুটি প্রকল্পের আওতায় চলমান ব্রিজ ও উড়াল সড়কের গার্ডার ভাঙার ঘটনা ঘটে। গত ১ মার্চ ভোরে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের একটি সেতুর গার্ডার ভেঙে বিকল হয়ে যায়। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বাস র্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পের গার্ডার ভেঙে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ্ বলেন, যন্ত্রের ত্রুটির কারণেই এমন দুর্ঘটনা। এটা মূল পিলারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তবে এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা কেন ঘটল পরবর্তী সময়ে যাতে না ঘটে এ জন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বসব। আপাতত ইমার্জেন্সিটা কেটে যাক। এ বিষয়ে ঢাকা বিআরটি কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মোট ছয় শ্রমিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুই চীনা নাগরিক ও বাকিরা বাংলাদেশী। আহতরা সবাই এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন আশঙ্কামুক্ত হলেও একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এর আগে আরেকটু উত্তরে আব্দুল্লাহপুরের পলওয়েল কারনেকশনের সামনে ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’ প্রকল্পের বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণাধীন একটি পিলারের একপাশের অংশ ধসে পড়েছে। রবিবার রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। রবিবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুরের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ সহজ করতে নির্মাণাধীন র্যাপিড ট্রানজিটের ২২ নম্বর পিলারের ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল পিআর টি শেপ। তার ওপর স্প্যান বসানোর কথা ছিল। তবে ঢালাই শেষ হলে রাতেই সেটি ধসে পড়ে। ধসে পড়ে কংক্রিট ও রডগুলো এখন বের হয়ে পড়ে আছে। উপরের ভারি রডগুলোও বাঁকা হয়ে থাকতে দেখা যায়। এদিকে নির্মাণ শ্রমিকরা ধসে পড়া পিলারের রডগুলো গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে কেটে ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত শ্রমিক সুমন বলেন, শনিবার রাত পর্যন্ত আমরা কাজ করেছি। ডিউটি শেষে বাসায় চলে যাই। সকালে এসে দেখি এর একপাশের অংশ ধসে পড়ে গেছে। তবে কীভাবে পড়েছে তা বলতে পারি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) শফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর-বিমানবন্দর বাস র্যাপিড ট্রানজিট নির্মাণকাজের আব্দুল্লাহপুর অংশটি বাংলাদেশে সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাভুক্ত। সেখানে প্রজেক্টের ২২ নম্বর পিলারের ওপর পিআর টি শেপ অংশের একপাশে ঢালাই শেষ করা হয়েছিল। অবশ্য তা গত রাত ২টার দিকে ধসে পড়ে। আমরা ধারণা করছি ঢালাইয়ের নিচে যে খুঁটি দেয়া হয়েছিল সেটি হয়তো নড়ে যেতে পারে। সে কারণেও ওই অংশটি ধসে গেছে। তবে এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর নেই। এ বিষয়ে আমরা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি গঠন করব। ওই কমিটি শুধু সিকিউরিটি সংক্রান্ত বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।