গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানো হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে শুক্রবার দিনভর গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করে গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা এই দাবি জানান। মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের গোপনে ধারণ করা একটি ভিডিও মঙ্গলবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা অভিযোগ করেন।
ওই ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের কোথাও ঝাড়ুমিছিল, কোথাও বিক্ষোভ মিছিলসহ সড়কে টায়ার চালিয়ে প্রতিবাদ করেন তাঁরা। এতে সড়কের উভয় পাশে বেশি সময় ধরে যান চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়ে হাজারো মানুষ।
আজ বেলা সাড়ে তিনটা থেকেই ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়কের নগরীর বোর্ডবাজার ৩৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সভা ডাকে। এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল, মহানগর ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম দ্বীপ, যুবলীগ নেতা আমিন উদ্দিন সরকার, ইসমাইল হোসেন, টঙ্গী পূর্ব থানা যুবলীগ নেতা ইসরাফিল হোসেন, টঙ্গী পশ্চিম থানা যুবলীগ নেতা আক্তার সরকার, গাছা থানা কৃষকলীগের সভাপতি শাহাজালাল তরুন ও সাধারন সম্পাদক মনিরূজ্জামান লিটন, গাছা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শফিক সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড ও থানার নেতাকর্মীবৃন্দ।
পাশাপাশি স্থানে দুই গ্রুপের সমাবেশ ডাকায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় পূর্ব থেকেই বোর্ড বাজার এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। দুই পক্ষের মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীরা একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এ সময় উভয়পক্ষের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। এসময় বোর্ড বাজার সহ আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে এবং সকল দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সড়কে উত্তেজনা বিরাজ করে এবং রাস্তার দুই পাশে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে মানুষের ব্যাপক দূর্ভোগ হয়।
এদিকে পুলিশ সহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গন ও ম্যাজিষ্ট্রেট প্রথম থেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকায় বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘঠতে পারেনি। পুলিশ দুই গ্রুপকেই শান্ত থাকার আহ্বান জানান। দুই গ্রুপের টানটান উত্তেজনায় এলাকায় সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অন্যদিকে টঙ্গী চেরাগ আলী, কলেজগেট, হোসেন মার্কেট, কোনাবাড়ী, পূবাইল সহ একত্র হতে থাকেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা। এ সময় তাঁরা প্রধান প্রধান সড়কে ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
গতকাল টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকা, চেরাগ আলী, ও হোসেন মার্কেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে টায়ারে আগুন দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সড়ক অবরোধ চলেছে বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। এরপর টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের ওপর টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। বিকেল চারটার দিকে কলেজগেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে টঙ্গী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। সেখানে মেয়র বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য দিয়েছে তারা।