মাতৃবাংলা /নিজস্ব প্রতিবেদন
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় চলছে উপচার্য, প্রো-উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, ডিন ও পরিচালকদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়তে ছয় লক্ষের অধিক শিক্ষার্থী সারাদেশব্যাপী ছড়িয়ে আছে। আইন অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ছাত্র নেওয়ার সরাসরি কোন বিধান না থাকলেও, সে অবস্থায় এখন কিছু সংখ্যক ছাত্র ক্যাম্পাসে কর্মকর্তাদের অফিস কক্ষ দখল করে হল হিসেবে বানিয়ে কিছু সংখ্যক শিক্ষকের ছাত্র ছায়ায় থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে রেখেছে। অথচ তাদের যে দাবি এটি হলো ক্যাম্পাসে ছাত্র ছাত্রিদের হল তৈরি করা ও নতুন একটি স্কুল/ফেকাল্টি খোলা। এসব কাজগুলো একটু সময় সাপেক্ষ কিন্তু তাদের এই দাবিগুলোর মধ্যে যে কিছুটা যৌক্তিকতা আছে এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারের বক্তব্য থেকে প্রতিফলিত হয়েছে। যদিও তাদের এই দাবিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি ও প্রো-ভিসির কাছে ছিল কিন্তু শিক্ষার্থীরা ভিসি ও প্রো-ভিসির সাথে ট্রেজারারকে জড়িয়ে ফেলছে। ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের একজন শিক্ষক। ওখানের সাধারণ শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে তিনি অত্যন্ত বিনয়ী সজ্জন মানুষ এবং সুশিক্ষিত। দূরশিক্ষণে ও উন্মুক্ত শিক্ষায় সারা বিশ্বে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যারা কাজ করে এদের মধ্যে উনি বলা চলে এক নম্বর ব্যক্তি। তিনি শুধুমাত্র আর্থিক বিষয় দেখেন, ছত্রদের দাবীর সাথে ঊনার কোন সম্পর্ক নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি নিজেও বৈষম্যের শিকার। উনি আওয়ামী সরকারের সময় তার যে বাংলোর রয়েছে তাঁর জন্য সে প্রতি মাসে ভাড়া দিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু সে বাংলোতে এখনো উঠতে পারেননি তাকে ফার্নিচার দেয়া হয়নি। এটি নিয়ে ইউজিসির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখও করা হয়েছে। তাছাড়া তার সরকারিভাবে যে ন্যায্য পাওনা গুলোর মধ্যে রয়েছে একটি গাড়ি। ভিসি ও প্রো-ভিসিরা জিপ ব্যাবহার করলেও, তিনি একটি দুর্ঘটনার শিকার একটি ছোট গাড়ি ব্যবহার করে এসেছেন। তাছাড়া তার স্টাফ সাপোর্ট যেটা দরকার সেটা তো পরিপূর্ণভাবে তাকে দেয়া হয়নি। কিন্তু তিনি যেহেতু বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের মানুষ এবং তিনি যেহেতু আপাদমস্তক একজন একাডেমিক মানুষ, তিনি নিরবে এগুলু সহ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ভালোবাসার কারণে কাজ করেয় গেছেন। তিনি দূরশিক্ষণ পদ্ধতির মাধ্যমেই সারা বিশ্বব্যাপী তার পরিচিতি তুলে ধরতে পেরেছেন, এখন পর্যন্ত আন্তর্জাতিকভাবে দূরশিক্ষণ, ওইআর, ই-লার্নিং, ব্লেন্ডেড লার্নিং বিষয়ক অনেকগুলো প্রজেক্টে সে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছে এবং বিদেশী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দূরশিক্ষণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে ও তাদের উন্মুক্ত শিক্ষা বিষয়ক নীতিমালা তৈরিতে সাহায্য করে সে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য তাকে একটা কর্তৃপক্ষীয় পদে থাকার পরও বিভিন্নভাবে তাঁর আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী যেসব আর্থিক ক্ষমতা বা কমিটির সভাপতি হওয়ার কথা তা থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীদের কাছে উনি একটি আদর্শ। দলীয় বিবেচনার বিপরিতে থেকে তিনি মানুষকে ভালবেসে, প্রতিষ্ঠান ও দেশকে ভালোবেসে কিভাবে কাজ করা যায় এই শিক্ষায় উনি শিক্ষিত। যার জন্য উনি নিজে বইষম্যের শিকার হলেও মুখ বুজে তা মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীর জন্য বইষম্যের শিকার না হয় সেটি তার সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকে কতৃপক্ষের সাথে বোঝাপড়া করার চেষ্টা সবসময় করে এসেছেন যার কারণে সর্বস্তরের শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাকে অনেক বেশী শ্রদ্ধার চোখে রেখেছেন। তিনি অর্থনীতিতে কৃতিতের সহিত পড়াশোনা করেছেন। তাঁর শিক্ষা জিবনে কোন ২য় বিভাগ নেই। পাশাপাশি দূর শিখন, ওইআর, ই-লার্নিংসহ একাধিক উন্মুক্ত শিক্ষার ভুবনে তার আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এক্সপার্টেজ আছে। তিনি ইউনেস্কো কমনওয়েলথ অফ লার্নিংসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে একাধিক কাজ করেছেন। কনফারেন্স ও প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য ও অন্যান্য একাডেমিক কাজের জন্য উনি প্রায় ৩০ টার বেশী দেশ ভ্রমণ করেছেন। দূরশিক্ষণের ব্যাপারে তার নিবেদিত প্রাণ এবং দক্ষতা প্রজ্ঞা রাষ্ট্র যদি পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারতো তাহলে হয়তো উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় কে একটি দূরশিক্ষণ বিষয়ে অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা যেত।