মাতৃবাংলা
গাজীপুর /জেলা প্রতিনিধি
৬০ ঘণ্টায় গড়িয়েছে গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকদের অবরোধ। প্রশাসনের একাধিক উদ্যোগ, বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হলেও শ্রমিকরা তাদের সিদ্ধান্তেই অটল রয়েছেন।
সোমবার ১১ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টায় পর শ্রমিকরা সেখানে অবস্থান নিয়ে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অপরদিকে, ‘বেতন না পেলে মহাসড়ক ছাড়ব না’—এমন দাবিতে শ্রমিকরা শক্ত অবস্থান নিলে এক মাসের বেতন আগামী রোববার (১৭ নভেম্বর) প্রদান করা হবে বলে মুঠোফোনে শ্রমসচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, শিল্পপুলিশ ও গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ উপস্থিত ছিল।
আশ্বাস পেয়ে সোমবার দুপুর ২টার দিকে টিএনজেড গ্রুপের আন্দোলনকারী শ্রমিকরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এরপর দুপুর পৌনে ৩টার দিকে যান চলাচল শুরু হলেও সোয়া ৩টার দিকে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় আন্দোলনকারী শ্রমিকরা বলেন, ‘আশ্বাস নয়, আমরা বেতন চাই। বেতন দিলেই অবরোধ প্রত্যাহার করা হবে।
টিএনজেড এ্যাপারেলস্ লিমিটেডের শ্রমিক আব্দুল কাদির বলেন, একাধিকবার বেতন পরিশোধের শুধু আশ্বাসই পেয়েছি, বেতন আর পাইনি। এবার আশ্বাস নয়, বেতন নিয়েই ঘরে ফিরতে চাই। মাস শেষে ঘর ভাড়া, দোকানের বাকি, সন্তানের স্কুলের বেতন পরিশোধ করে গ্রামে মা-বাবার কাছে টাকা পাঠাতে হয়। সঠিক সময়ে টাকা পরিশোধ না করতে পারলে বাড়িওয়ালা ও দোকানদারের কথা শুনতে হয়।
রাহেলা আক্তার নামে আরেক শ্রমিক বলেন, দুই মাসের বেতন না দেওয়ায় আমাদের না খেয়ে থাকার অবস্থা তৈরি হয়েছে। বেতন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ মায়ের ওষুধ কিনে দিতে হয়, দুই মাসে বেতন বকেয়া থাকায় সেটাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনা করেও আমাদের বেতনগুলো পরিশোধ করা উচিত।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, অবরোধ তুলে নেওয়ার আধাঘণ্টা পর ফের মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা। তারা বলছেন, তাদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। এখন তারা আশ্বাস মানছে না। অধিকাংশ শ্রমিক বলছেন, ‘আমরা বকেয়া বেতনের টাকা যতক্ষণ হাতে না পাবো ততক্ষণ পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ থাকবে।’
উল্লেখ, গত শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয় শ্রমিকদের এই বিক্ষোভ। এরপর তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। টানা তিন দিনের অবরোধে মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতকারী যাত্রী, অফিসগামী চাকরিজীবী, শিক্ষার্থী, চালক, এলাকাবাসী ও সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে অনেককে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে।