নিজস্ব প্রতিনিধি/জাকারিয়া শিকদার
আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরে হামলায় আহত হয়ে মারা যাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী আবুল কাশেমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মহানগরীর রাজবাড়ি মাঠে তাঁর জানা হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয়।
জানাজায় অংশ নিয়ে মহানগর জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও আগামী সংসদ নির্বাচনে গাজীপুর-আসনের জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মো. হোসেন আলী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের জানান। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে যেভাবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিও নিষিদ্ধ করতে হবে।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরের ধীরাশ্রম দক্ষিণখান এলাকায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে গত শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালায়। খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে সেই বাড়িতে যান। এ সময় তাঁদের ওপর হামলা করা হয়।
হামলায় ১৭ জন গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার বিকেলে আবুল কাশেম মারা যান। তিনি মহানগরীর দক্ষিণ কলমেশ্বর এলাকার হাজি জামালের ছেলে।
জানাজার নামাজে অংশ নেন গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ডা. নাজমুল করিম খান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুন আল রশিদ, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) মো. রায়হানুল ইসলাম, গাজীপুর মহানগর জামাতের আমির অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান এলিস, টঙ্গী পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি বশির উদ্দিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ আহমেদ তানভীর, হেফাজতে ইসলাম গাজীপুরের আমির নাসির উদ্দিন।
হামলার ঘটনায় ৯ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাজীপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মো. আব্দুল্লাহ আল মোহিত। এতে ২৩৯ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। প্রধান আসামি করা হয়েছে আমজাদ মোল্লা নামের একজনকে। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী ও সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেলের ভাতিজা। এ মামলায় সর্বশেষ ১৩২ জনকে গ্রেপ্তার করার তথ্য পাওয়া গেছে।
গাজীপুর মহানগরের সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, নিহত শিক্ষার্থীর ঘটনায় আগের মামলার সঙ্গে নতুন করে এটি হত্যা মামলা সংযুক্ত করা হবে। এ হামলায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
এদিকে দেশের প্রত্যেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে, গ্রামে শহীদ বীর কাশেমের গায়েবানা জানাজা, আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধের দাবিতে খাটিয়া মিছিলের কর্মসূচি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।