নিজস্ব প্রতিবেদক/জাকারিয়া শিকদার।
গাজীপুরে অটোরিকশাচালক হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজীপুরে চালক হাবিবুর রহমানকে জবাই করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এক কিশোরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।হত্যাকাণ্ডের একদিন পর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই আলাদা স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরীর পূবাইল ও ঢাকার উত্তারায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিবিআই জেলা ইউনিটের পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—পূবাইলের মেঘুবি এলাকার পরশ আলীর ভাড়াটিয়া রবিন মিয়া (১৫) এবং উত্তরার তুরাগ থানার ১০ নম্বর সেক্টরের সিরাজ মার্কেট এলাকার লাইজু বেগমের ভাড়াটিয়া মিজানুর রহমান (৩১)।
নিহতের স্বজনরা জানায়,গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৭টার দিকে হাবিবুর রহমান তার অটোরিকশা নিয়ে পুবাইল এলাকা থেকে বের হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাচ্ছিলেন না।
পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, নিহত জামালপুরের মেলন্দহের হাবিবুর রহমান (৪২) গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানার মেঘডুবি পশ্চিমপাড়া ভাড়া থেকে অটোরিকশা (মিশুক) চালাতেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অটো নিয়ে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেননি। পরদিন সকালে নগরীর ধীরাশ্রম এলাকায় সড়কের পাশে একটি অজ্ঞত জবাই করা মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা।এরপর ৯৯৯ কল করে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনা স্থলে পৌঁছায় গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন পুলিশ! এরপর নিহতের স্বজনরা এসে মরদেহ দেখে নিশ্চিত হয় । সঙ্গে থাকা মোবাইল, টাকা অটোরিকশাটি পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই জালাল উদ্দিন বাদি গাজীপুরে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।পরবর্তীতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব গাজীপুর পিবিআইকে দেওয়া হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার তাদের গাজীপুর মহানগর আদালতে পাঠানো হলে হাবিবুর রহমানকে হত্যা এবং অটোনিকশাটি ভাঙারির দোকানে বিক্রি করার কথা বিচারকের কাছে স্বীকার করেছেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় , অটোরিকশা চালক হাবিবুর রহমানকে অভিযুক্ত রবিন মিয়া ও মামলার ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামীরা মিলে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ফোন করে অটোরিকশাটি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে ধারালো কাটার (এন্টি কাটার) দিয়ে গলা কেটে হাবিবুরকে হত্যা করে লাশ রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে অটোরিকশা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। পরে ঘটনায় জড়িত আসামিরা অটোরিকশাটি আসামি মিজানুর রহমানের কাছে দিলে তিনি অটোরিকশার ৪টি ব্যাটারি, অটোরিকশার সামনে ব্যবহৃত গ্লাস, ২টি লুকিং গ্লাস ও ৪টি চাকা নিজের হেফাজতে রেখে অটোরিকশার বাকি অংশ ভাঙ্গারীর দোকানে বিক্রি করে টাকা ভাগাভাগি করে নেয়। এ ব্যাপারে অভিযুক্তরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।