স্টাফ রিপোর্টার: সৌরভ হাসান হাসিব।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের হাউলি জয়পুর গ্রামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করার পর তার ঘর থেকে টাকা ও গয়নাগাটি লুটের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার সকালে সালমা খাতুন (২৫) নামের ওই গৃহবধূর গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সালমা খাতুন সৌদি আরবপ্রবাসী আজাদ মল্লিকের স্ত্রী ছিলেন এবং তাঁদের দুটি ছোট শিশু, সাদিক (৬) ও সিনহা (৪), রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে ঈদের দিন সালমা তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমাতে যান। পরদিন মঙ্গলবার সকালে সালমার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ঘরের সামনে গিয়ে সাদিককে ডাক দেন। শিশুটি ঘরের ভেতর থেকে কান্না করতে করতে দরজা খুলতে বলে। অবশেষে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা দরজা খুলে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করেন এবং সেখানে তারা দেখতে পান সালমার অচেতন লাশ খাটে পড়ে রয়েছে, তার গলায় ওড়না প্যাঁচানো ছিল। তাঁর দুই সন্তান, সাদিক ও সিনহা, পাশাপাশি বসে ছিল। এ দৃশ্য দেখে তাদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
সালমার শাশুড়ি লতা বেগম বলেন, “আমার ছেলে ঈদের আগে সৌদি আরব থেকে এক লাখ টাকারও বেশি টাকা পাঠিয়েছিল। ওই টাকা সালমা ঘরে রেখেছিল। সালমাকে হত্যা করার পর ওই টাকা ও তার গয়নাগুলি লুট করে নিয়ে গেছে।” সালমার বাবা সালাম শেখ জানান, “আমার মেয়ে কারও সঙ্গে কোনো বিবাদে ছিল না। আমি তার হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, “সালমা খাতুনের মরদেহটি সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
এ ঘটনার পরপরই এলাকার মানুষের মধ্যে গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেশীরা বলেন, সালমার হত্যার ঘটনা এলাকায় এক বড় ধরনের আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, এবং সবাই মনে করছেন যে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, যার উদ্দেশ্য ছিল শুধু হত্যাই নয়, সাথে সাথে টাকা ও মূল্যবান গয়নাও চুরি করা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা বলছেন, সালমার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা উচিত যাতে এমন নির্মম ঘটনা ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না হয়। পুলিশ এ ব্যাপারে জোর তদন্ত শুরু করেছে এবং সবার সহায়তায় হত্যাকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।