জাকারিয়া শিকদার /সম্পাদক,মাতৃবাংলা।
ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। আজ বৃহস্পতিবার ঈদের চতুর্থ দিনেও সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, কলাতলী পয়েন্টসহ আশপাশের পর্যটন স্পটগুলোতে লোকে-লোকারণ্য হয়ে ওঠে।পর্যটকরা জানিয়েছেন,যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ কাটাতে কক্সবাজারের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন তারা।পর্যটকের কেউ কেউ সাগরের ঢেউয়ে শরীর ভিজিয়ে টিউব নিয়ে সাঁতার কেটে উপভোগ করছেন স্বচ্ছ সাগরের জলরাশি। আবার অনেকেই জেড স্কিতে চড়ে ঘুরে আসছেন ঢেউয়ের তালে তালে।সৈকতের বালিয়াড়িতে ঘোরাফেরা, কিটকিটে বসে সাগরের শীতলতা উপভোগেও ব্যস্ত ছিলেন অনেকে। ঈদ উৎসব ঘিরে কক্সবাজার সৈকতে ছিল সব বয়সী মানুষের আনন্দ-উল্লাস।রমজানে পর্যটক কম থাকলেও ঈদের ছুটিতে ভিড় বাড়ছে।
কক্সবাজার বেড়াতে আসা পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ সমুদ্র গোসল।আর তাদের এইসমুদ্র গোসল নিরাপদ করতে কাজ করছে সী-সেইফ লাইফ গার্ড। সংস্থাটির ফিল্ড টিম ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, আগত পর্যটকদের নিরাপদ সমুদ্র স্নান নিশ্চিত করতে সমুদ্রসৈকতের তিনটি জনপ্রিয় পয়েন্ট সুগন্ধা, কলাতলীও লাবণী পয়েন্টে লাইফ গার্ডের ২৭ জন সদস্য কাজ করছে। এছাড়া সমুদ্র স্নানে নেমে যাতে কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা না ঘটে সে জন্য আগত পর্যটকদের সচেতন করা হচ্ছে।
খুলনা থেকে থেকে আগত পর্যটক আল-আমিন হোসেন মাতৃবাংলা নিউজ কে বলেন, ‘সারা বছরই কোনো না কোনো কাজে ব্যস্ত থাকি তাই ঈদের টানা ছুটিতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে।খুবই আনন্দিত আমরা। সমুদ্রপারে ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে জলকেলিতে মেতে ছিলেন ফরিদপুর থেকে আগত পর্যটক ফয়সাল। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার এসে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে মন একেবারে জুড়িয়ে যায়, তাই প্রতিবছর অন্তত একবার হলেও এখন আসার চেষ্টা করি।
গাজীপুর থেকে থেকে এসেছেন মোহাম্মদ কবির। তিনি বলেন, ‘ছুটি কাটাতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে আসছি।সাগরের গর্জন শুনে আর সাগরের নীল জলরাশিরে পা ভেজাতে পেরে আমরা উচ্ছ্বসিত।’
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘আজ ঈদের পরের দিন সকাল থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে তারকা মানের হোটেলগুলো প্রায় বুকিং রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে হোটেল ভাড়া বেশি নিচ্ছেন।’
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মহমুদ বলেন, ‘কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা পুলিশের সহযোগিতায় পর্যটন এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে।’ পর্যটকেরা কক্সবাজার ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন সে জন্য যা যা করার প্রয়োজন সব কিছু করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।
হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সাড়ে পাঁচ শতাধিক আবাসিক হোটেলের প্রায় ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকড রয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যটকের ঢল অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘ঈদের প্রথম দিনে পর্যটক তুলনামূলক কম থাকলেও দ্বিতীয় দিন থেকে পর্যটকের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১ এপ্রিল এক লাখের বেশি পর্যটক কক্সবাজার এসেছেন এবং ৫ এপ্রিল পর্যন্ত এ সংখ্যা ৭ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারের পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালী ও রামুর বিভিন্ন স্থানে পর্যটকের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।