স্টাফ রিপোর্টার : সৌরভ হাসান হাসিব
নোয়াখালী: মোটরসাইকেলকে পাশ না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যাত্রীবাহী একটি বাসকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ধাওয়া করে একদল তরুণ। এ সময় চালকের মাথা ও মুখে ইট নিক্ষেপ করলে গুরুতর আহত হন তিনি। বর্তমানে চালক মো. সোহেল নোয়াখালীর মাইজদী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার গভীর রাতে। ‘একুশে পরিবহন’-এর বাসটি ঢাকা থেকে নোয়াখালীর দিকে যাচ্ছিল। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা অতিক্রম করার পর থেকেই ৮-১০টি মোটরসাইকেলযোগে তরুণদের একটি দল বাসটির পেছনে ধাওয়া করে। প্রায় ৪০ কিলোমিটার পেছন থেকে অনুসরণ করার পর তারা নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর ছাতারপাইয়া এলাকায় গিয়ে বাস থামানোর চেষ্টা করে।
বাস না থামায় চালক সোহেলকে লক্ষ্য করে ছুড়ে মারা হয় ইট। এতে তার চোয়ালে গুরুতর আঘাত লাগে এবং মাথায় দুইবার ইটের আঘাত পান তিনি। মুখে মারাত্মক রক্তপাত হওয়া সত্ত্বেও যাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাস চালিয়ে যেতে বাধ্য হন তিনি।
বাসচালকের সহকারী মোহাম্মদ রাহাত জানান, চালক আহত হওয়ার পরও তারা যাত্রীদের নিরাপদ রাখতে বাস চালিয়ে সোজা সুধারাম থানার সামনে নিয়ে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর সব যাত্রী দ্রুত থানায় আশ্রয় নেন।
মাইজদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাজীব আহমেদ জানান, সোহেলের মাথা ও চোয়ালে ৩১টি সেলাই পড়েছে এবং নিচের পাটির দুটি দাঁত ভেঙে গেছে। তবে চিকিৎসায় উন্নতির দিকে রয়েছেন তিনি।
বাসের সামনের কাচও ইটের আঘাতে ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে বাসটি সুধারাম থানার সামনে রাখা আছে।
বাসের মালিক মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর তিনি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে তাকে বিভিন্ন থানায় ঘুরতে হয়—সুধারাম, সোনাইমুড়ী এবং লাকসাম থানার মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করেও স্পষ্ট সমাধান মেলেনি।
হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. খায়রুল আলম বলেন, ‘বাসচালকের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণেরা এমন কাণ্ড ঘটায়। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তারা ডাকাত নয় বরং স্থানীয় যুবক, যারা ঈদের রাতে বাইক রাইডে বের হয়েছিল।’
এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ‘ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। বাস মালিক যদি মামলা করতে চান, তা গ্রহণ করা হবে।’