স্টাফ রিপোর্টার: সৌরভ হাসান হাসিব।
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলা ও মানবাধিকারের ভয়াবহ লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সোমবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচারে চালানো এই ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ অবিলম্বে বন্ধে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর প্রতি জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে পদ্ধতিগত সহিংসতা চালাচ্ছে, তা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন ও ন্যায়বিচারের চরম লঙ্ঘন। গাজা শহরের ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় বারবার বিমান হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুদের প্রাণহানি ঘটানো হচ্ছে। এই পরিস্থিতিকে বাংলাদেশ সরকার গণহত্যার শামিল বলে মনে করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানায়, সম্প্রতি ইসরায়েলের একতরফা যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফের হামলা শুরুর পর থেকে অসংখ্য ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বড় একটি অংশ নারী ও শিশু। এছাড়া খাদ্য, চিকিৎসা ও জরুরি সহায়তা নিয়ে গাজায় প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে মানবিক বিপর্যয় আরও তীব্র করে তুলেছে ইসরায়েলি প্রশাসন।
বাংলাদেশের মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার আহ্বান জানালেও ইসরায়েল তা উপেক্ষা করে নির্বিচারে বোমাবর্ষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে কার্যকর ও প্রতিফলনযোগ্য উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ, যাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয় এবং বেসামরিক নাগরিকদের জানমাল রক্ষা করা সম্ভব হয়।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ সরকার স্পষ্টভাবে জানায়, তারা ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের সীমান্ত অনুযায়ী একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে রয়েছে এবং সবসময়ই থাকবে।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সংলাপ ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার গুরুত্বও তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে। বাংলাদেশ বিশ্বাস করে, এই অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা না হলে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাও হুমকির মুখে পড়বে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে ফিলিস্তিন সমস্যার টেকসই ও ন্যায়ভিত্তিক দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান জরুরি। মানবতা রক্ষায় বিশ্ব সম্প্রদায়ের এখনই এগিয়ে আসা উচিত।