জাকারিয়া শিকদার,চিফ ইন এডিটর,মাতৃবাংলা।
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক ঝুট ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তার টাকা লেনদেন সম্পর্কিত একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। গত রবিবার রাত থেকে কথোপকথনের অডিওটি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়াতে থাকে। অডিও টি নিয়ে তোলপাড় চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম সিকদার গাজীপুরের শ্রীপুরের নগরহাওলা গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে। অপরদিকে কথোপকথনে অংশ নেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল। তিনি শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
গত রবিবার রাতে ভাইরাল অডিওতে শোনা যায়, ব্যবসায়ী সেলিম ও ওসির কথোপকথন। অডিওতে ওসি প্রথমে ঝুট ব্যাবসায়ী সেলিমের নিকট এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন।একসময় পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে সেলিমকে বলেন ‘তোর নানাকে বলিস লাখ পাঁচেক টাকা দিতে।’ ওই নেতার ঝুট ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ওসি তার কাছে ঘুষ দাবি করেন। একপর্যায়ে সেলিমের কাছে ওসি ফুল হাতা গেঞ্জিও দাবি করেন। এসময় তিনি আরও বলেন, তোমার নানা আমাকে দেখে না কেন? ৫ হাজার ১০ হাজার এটা কোনো টাকা? এই টাকা দিয়ে কী হয়। আমি এত চাপ নিচ্ছি। তোমার নানাকে বইলো আমাকে লাখ পাঁচেক টাকা দিতে।
সেলিম জানান, তার নানা মকবুল মেম্বার স্থানীয় একটি কারখানায় ঝুট ব্যবসা করতেন। তিনি নানার ব্যবসা পরিচালনা করেন। গত ৫ আগস্টের পর তাদের
ব্যবসা পরিচালনায় নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। শ্রীপুর থানার বর্তমান ওসি মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রীপুর থানায় যোগদান করেন। তার নিকট ব্যবসা পরিচালনা করতে সহায়তা চাইতে গেলে মাসে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। অনেক দরকষাকষি করে মাসে এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা দিতেন। তার চাহিদামতো টাকা না দেওয়ায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আমাকে ডেভিলহান্টের অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়। আমাকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে স্বজনদের কাছে ওসি ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। আমরা তার দাবি করা টাকা দিতে পারিনি। আড়াই লাখ টাকা নিয়ে আমাকে বৈষম্যবিরোধী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। আমি এক মাস জেলহাজতে থেকে জামিনে আসি। আমার সঙ্গে ঘুষ দাবির কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরাতে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে শ্রীপুর থানার ওসি মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ওই ব্যক্তিকে আমি চিনি না। সে ডেভিলহান্টের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছিল। জেল থেকে জামিনে এসে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে। রবিবার রাতে অডিও ফাঁসের কথা শুনেছি। এটি সুপার এডিট করা রেকর্ড। ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমার এমন কোনো কথা হয়নি।