স্টাফ রিপোর্টার: শাকিল শেখ।
গাজীপুরের শ্রীপুরে বনভূমি জবরদখল করে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে শ্রীপুর রেঞ্জের সাতখামাইর বিটের তালতলী পেলাইদ ও সাইটালিয়া গ্রামে এই অভিযান চালানো হয়।গাজীপুরে বনের জমিতে গেল ৫ আগস্টের পর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগে গড়ে উঠা বসত বাড়ি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে যৌথ বাহিনী।
সকালে জেলার শ্রীপুরের তালতলী গ্রামে উপজেলা প্রশাসনের সাথে উচ্ছেদ অভিযানে যোগ দেয়, বন বিভাগ, পুলিশ, রেব, বিজিবি, সেনাবাহিনী। এসময় দুপুর পর্যন্ত ৩০টির অধিক বসত বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিকাল পর্যন্ত চলবে এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ জানান, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সুযোগ নিয়ে তালতলি গ্রামে বনের রেকর্ড ভুক্ত জমিতে অর্ধশত উপরে বসন্ত ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় বাসিন্দারা। বনের জমি থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নোটিশ দেওয়ার পরেও বসতঘর সরিয়ে নেয়নি তারা। যার কারণে আজ যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এছাড়াও পর্যায়ক্রমে সকল অবৈধ দখলদারদের কে বনের জমি থেকে উচ্ছেদ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এতে নেতৃত্ব দেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ। অভিযানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসার ও বন বিভাগের চার শতাধিক সদস্য সহযোগিতা করেন।
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান জানান, ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পরপরই শ্রীপুর রেঞ্জের অধীনে সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভূমি জবরদখল করে অনেক অবৈধ বসতবাড়ি ও স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এসব ভূমি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় অবৈধ বসতবাড়ি চিহ্নিত করে উচ্ছেদের আবেদন করা হয়।
তবে অভিযান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আকলিমা আক্তার নামের এক পোশাকশ্রমিক বলেন, ‘শরীরের রক্ত পানি করে গার্মেন্টসে কাজ করে উপার্জিত টাকা দিয়ে একটি ঘর তুলছিলাম। আজ এসে আমাকে গাছতলায় বসিয়ে দিল। আশপাশে তো শত শত ঘরবাড়ি, সেগুলো সব থাকল, শুধু আমাকে চোখে পড়ল। অবুঝ শিশু নিয়ে কোথায় থাকব? আমাদের তো কোনো জমি নেই।’
আরেক বাসিন্দা নূরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বামী-স্ত্রী গার্মেন্টসে চাকরি করে অনেক কষ্ট করে একটি ঘর নির্মাণ করছি। আমাদের যদি নিজের জমি থাকত, তাহলে কি বনের জমিতে ঘর বানাইতাম? আপনারা দেখেন, আমাদের বাড়ির আশপাশে কোনো বনাঞ্চল আছে কি না। একটি গাছও আমরা ধ্বংস করি নাই।’