জাকারিয়া শিকদার, এডিট-ইন-চিফ,মাতৃবাংলা।
গাজীপুর মহানগরের পূবাইলে মসজিদের ইমাম মাওলানা রইস উদ্দিনকে নির্যাতন ও পরে কারা হেফাজতে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর অভিযোগে দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে গাজীপুরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।
বুধবার দুপুরে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ এর উদ্যোগে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বহুল আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি গিয়াস উদ্দিন তাহেরী।
দাওয়াতে ঈমানী বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি গিয়াসউদ্দিন তাহেরী বলেছেন, বাংলাদেশে প্রতিবাদের জোয়ার বেড়ে গেছে। প্রশাসন যত স্বজনপ্রীতি দেখাবে, কাহিনি করবে, আমাদের বাহিনী একের পর এক রাস্তায় নেমে যাবে। এটা পরিষ্কার সুন্নিরা বানের জলে ভেসে আসা কচুরি পানা নয়।
তিনি আরও বলেন, রইস উদ্দিন শুধু আমাদের সুন্নিদের সম্পদ না। তিনি সব ইমামদের ও বাংলাদেশের প্রেরণা। যে ব্যক্তি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন, তার পক্ষে শুধু আমরা কথা বলছি না। সব আলেম-ওলামারা অনলাইন-অফলাইনে ও রাজপথে প্রতিবাদ করছেন। এত বড় প্রতিবাদের মুখে প্রশাসন তার মামলাটা নিচ্ছে না। এর পেছনে কিছু দুরভিসন্ধি রয়েছে, আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে তার রহস্যর উদঘাটন করতে চাই।
এছাড়াও সুন্নাত ওয়াল জামা’আতের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আনম মাসুদ হোসেন আল কাদেরী, জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল আউয়াল কাদেরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।বক্তাগণ বলেন, অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে রইস উদ্দিনকে শহীদ করা হয়েছে। তার স্ত্রী থানায় মামলা জমা দিয়েছেন। এ পর্যন্ত মামলাটি রেকর্ড করা হয়নি। মামলা গ্রহণ করে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেফতার করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে গাজীপুর প্রেস ক্লাবের সামনে এসে কর্মসূচি শেষ করেন।
এর আগে বলাৎকারের অভিযোগ তুলে ওই ইমামকে গত ২০শে এপ্রিল সকালে গণপিটুনি দেন স্থানীয়রা। এ সময়ে গলায় জুতার মালা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পুবাইল থানার পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। কারাগারে অসুস্থ হয়ে রাতেই তার মৃত্যু হয়। পরে এ মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করে নিহতের পরিবার। ইমামকে নির্দোষ দাবি করে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গত ২১শে এপ্রিল রাতে শুবাইল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নিহতের স্ত্রী। অভিযোগে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত রইস উদ্দিন (৩৫) চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে। গাজীপুর মহানগরীর পুবাইল থানাধীন হায়দরাবাদ এলাকায় আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।