জেলা প্রতিনিধিঃ
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রি. : দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের উদ্যোগে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। রবিবার বেলা ২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক (এডি) মোহাম্মদ আল-আমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দুদকের ডিডিএ মোহাম্মদ তহিদুল ইসলাম ও চিরঞ্জিব নিয়োগীসহ অন্য কর্মকর্তারা। হাসপাতালের পক্ষে ছিলেন আরএমও ডা. হাবিবা সিদ্দীকা ফোয়ারা।
অভিযানকালে হাসপাতালের রান্নাঘরে নানা অনিয়ম ধরা পড়ে। দেখা যায়, রোগীদের নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে কম ভাত, পাউরুটি, ছোট সাইজের ডিম দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নিম্নমানের লবণ, পেঁয়াজ, রসুন এবং মোটা চাল ও ডাল ব্যবহার করা হচ্ছে।
ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গিয়ে দুদক কর্মকর্তারা দেখতে পান, মজুদে ১৬০ পিছ স্যালাইন থাকলেও রোগীদের বাইরে থেকে স্যালাইন কিনতে বলা হচ্ছে। দায়িত্বরত সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্যালাইন বিতরণ বন্ধ রাখা হয়েছে ।অভিযানকালে প্লাস্টার রুমে গিয়ে কর্মকর্তারা আরও একটি অনিয়মের সন্ধান পান। সেখানে আউটসোর্সিং কর্মীদের পরিবর্তে বহিরাগত ব্যক্তিরা প্লাস্টার সেবা দিচ্ছেন এবং রোগীদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন।
দুদক কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম সম্পর্কে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হোসাইন শাফায়েতকে অবহিত করেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে জানা যায়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে হাসপাতালের খাবার সরবরাহের টেন্ডার কার্যক্রম নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। ঠিকাদার শফিকুর রহমান শিলু কার্যাদেশ পেলে তাঁর ভাই হাফিজুর রহমান তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে টেন্ডার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় দীর্ঘদিন ধরে শিলুই পূর্বের দর অনুযায়ী রোগী প্রতি ১২৫ টাকায় খাবার সরবরাহ করছেন। বর্তমানে সরকারি বরাদ্দ ১৭৫ টাকা হলেও ভ্যাট-ট্যাক্স বাদ দিয়ে প্রতি রোগীর খাবারের জন্য বরাদ্দ থাকে মাত্র ১১৩ টাকা। ফলে মানসম্মত খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।