নিজস্ব প্রতিনিধি,আলি হোসেনঃ
ময়মনসিংহের এক তরুণ অটোরিকশা চালক রামিম (১৮) তার জীবনের একমাত্র ভরসার অটোরিকশা চুরি যাওয়ার পর যখন সেটি উদ্ধার হলো, তখন মনে হয়েছিল দুর্দশার অবসান ঘটবে। কিন্তু গাড়ি ফেরত পেলেও নতুন ভোগান্তি শুরু হয়েছে তার জন্য। গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে ময়মনসিংহের পাগলা থানার নিগুয়ারী এলাকা থেকে চুরি হয় রামিমের অটোরিকশা।
এ ঘটনায় তিনি একাধিক থানায় ছুটোছুটি করেন। অবশেষে ১২ সেপ্টেম্বর সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার বৈরাগীচালা থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। শ্রীপুর মডেল থানার এসআই মতিউর রহমান চোরসহ অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসেন। অটোরিকশা ফিরে পাবেন ভেবে স্বস্তি পেলেও থানায় গিয়ে নতুন বিপদে পড়েন রামিম। তার অভিযোগ, গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে হলে তাকে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন এসআই মতিউর। গরিব পরিবারের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব না হলেও অনেক কষ্টে ১৭ হাজার টাকা ধার করে ও বড় ভাবির গয়না বন্ধক রেখে তিনি তুলে দেন পুলিশের হাতে।
কোনো রশিদ বা লিখিত প্রমাণ ছাড়াই টাকা গ্রহণ করেন এসআই। গাড়ি ফেরত পেলেও দেখা যায়, ৫টি ব্যাটারির মধ্যে ৩টি নেই। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে এসআই মতিউর ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, এখনই চলে যাও, না হলে আরও সমস্যা হবে। এসআইয়ের বক্তব্য অভিযোগের বিষয়ে এসআই মতিউর রহমান বলেন, ওসি স্যারকে জানিয়েছি। সিসিটিভি দেখে বোঝা যাবে ব্যাটারি কে নিয়েছে। আর তিনটি ব্যাটারির দাম অনেক। তাই কিছু
টাকা রাখা হয়েছে। বাকি টাকা দিয়ে ব্যাটারি কিনে দেওয়া হবে। পরিবারের ক্ষোভ রামিমের পরিবারের অভিযোগ, গাড়ি উদ্ধারের নামে তাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হয়েছে। তারা বলেন, আমরা কোনো অপরাধ করিনি। তবুও আমাদের সঙ্গে চাঁদাবাজির মতো আচরণ করা হলো। পুলিশের আশ্বাস এ বিষয়ে শ্রীপুর মডেল থানার ওসি আব্দুল বারিক বলেন,এমন ঘটনা হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. জাবের সাদেক বলেন, চুরি হওয়া মালামাল প্রকৃত মালিককে বুঝিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অটোরিকশা চালক রামিমের অভিজ্ঞতা আবারও প্রমাণ করে সাধারণ মানুষের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হওয়া কতটা দুঃসহ হতে পারে। তদন্ত ও বিচার দাবি করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।