জেলা প্রতিনিধি,মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ),
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী, মধ্যনগর সদর, উত্তর বংশীকুন্ডা ও দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের গ্রামীণ জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ‘ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল’-এর ভোগান্তিতে ভুগছেন। মাত্র একটি ফ্যান ও এক-দুটি বাতি চালিয়েও মাস শেষে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকার বিল আসছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, দিনের বেশিরভাগ সময়ই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অনিয়মিত থাকে। তার মধ্যেও মাস শেষে অতিরিক্ত বিল এসে পড়ছে, যা সাধারণ পরিবারগুলোর ওপর বাড়তি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক সময় গ্রাহকদের হাতে সঠিকভাবে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পৌঁছায় না। আবার ঠিকমতো মিটার রিডিং করতেও লোক আসে না। কখনও কখনও মিটার না দেখে অনুমান করে বিল তৈরি করা হয়। ফলে সাধারণ মানুষকে প্রকৃত ব্যবহারের তুলনায় অনেক বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে।
এমনও অভিযোগ রয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের হয়রানি করা হয়। তারা যদি কাউকে ‘টাকা’ না দেন, তবে তাদের কাজ নাকি ‘ডিলামেশার’ (বিলম্ব বা ঝুলিয়ে রাখা) মাধ্যমে করা হয়। এতে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।
এছাড়াও স্থানীয়দের অভিযোগ, মহিষখলা অভিযোগ কেন্দ্রেও অনেক সময় ন্যায্য অভিযোগ নিয়ে গেলে জনসাধারণকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে মামলার ভয়ও দেখানো হয়, ফলে অনেকেই ভয় পেয়ে চুপ থাকেন।
চামরদানী ইউনিয়নের এক বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা জানি কতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করি। তারপরও মাস শেষে বিল আসে ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, কখনও কখনও আরও বেশি। এটা একেবারেই অন্যায়।”
স্থানীয় নারী শাহানা আক্তার বলেন, “আগে যেখানে ৮০-৯০ টাকা বিল আসত, এখন সেখানে ১২০০, ১৪০০ এমনকি ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আসে। অথচ ব্যবহার একই।”
এ বিষয়ে উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের সাউদপাড়া গ্রামের প্রাণীর চিকিৎসক মোঃ বাছির মিয়া বলেন, “আগে মাসে বিল আসত মাত্র ৬৫ টাকা, এখন আসে ৭০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। বিদ্যুৎ ব্যবহার তেমন বাড়েনি, তবুও বিল বেড়েই চলেছে।”
এলাকাবাসীর দাবি—
সঠিক মিটার রিডিং নিশ্চিত করা, প্রতিটি বাড়িতে সময়মতো বিল সরবরাহ করা, মিটার রিডারদের নিয়মিত মাঠে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, গ্রাহকদের হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন বন্ধ করা, এবং চার ইউনিয়নের অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত বিল বাতিল করে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।