নিজস্ব প্রতিনিধি/আল-ইমরান।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের শিকার সাংবাদিকের মোবাইলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে।ডিএমপি আরও জানিয়েছে, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ ওঠায় মোহাম্মদপুর থানার চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন—এসআই জসিম উদ্দিন, এএসআই আনারুল, পুলিশ সদস্য মাজেদুর রহমান ও মো. নুরুন্নবী।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় আহমাদ ওয়াদুদ নামে একজন সাংবাদিককে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। ছিনতাইকারীরা তার কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নেয়। এ সময় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে সেখানেও ভোগান্তির শিকার হন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
জানা যায়, ভুক্তভোগী তাৎক্ষণিকভাবে মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে ছিনতাইয়ের ঘটনা জানান। ঘটনা শুনে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আলী ইফতেখার হাসান নিজের মোবাইল ফোন দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে বলেন, আমি ওসি হয়েও এই কম দামি ফোন ব্যবহার করি, আপনি এত দামি ফোন নিয়ে ঘুরলে ছিনতাই তো হবেই!
ভুক্তভোগী সাংবাদিক জানান,বৃহস্পতিবার রাত ১১টার স্ত্রী কে নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন ওয়াদুদ। তিন রাস্তায় পৌঁছালে একাধিক ছিনতাইকারী এসে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে তার সঙ্গে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ নিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা এবং চাপাতি দিয়ে সামান্য আঘাত করে। সৌভাগ্যবশত, তার স্ত্রী অক্ষত ছিলেন। ঘটনার পরপরই ভুক্তভোগী ও তার স্ত্রী মোহাম্মদপুর থানায় যান। ডিউটি অফিসার এসআই জসিমের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি প্রথমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং অভিযোগ লেখার লোক নেই বলে জানান। পরে ভুক্তভোগী নিজেই অভিযোগ লিখলেও তার কোনো কপি দেওয়া হয়নি। তাকে এএসআই আনারুলের সাথে ফোনে কথা বলতে বলা হয়, যিনি ঘটনাস্থলে যেতে পারবেন।
ভুক্তভোগী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের অনুরোধ জানালে এসআই জসিম তা সম্ভব নয় বলে জানান এবং ছিনতাইকারীদের ঘটনাস্থলে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন। এরপর ভুক্তভোগী ওসি ইফতেখার হাসানের কক্ষে যান। ওসি তার দামী ফোন ব্যবহার নিয়ে মন্তব্য করেন এবং এএসআই আনারুলের সাথে যোগাযোগ করে তাকে বাসস্ট্যান্ড মোড়ে অপেক্ষা করতে বলেন।
তিনি আরও জানান, প্রায় ৪০ মিনিট পর এএসআই আনারুল ও তার দল ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ভুক্তভোগী ছিনতাইকারীদের সেখানেই বসে থাকতে দেখিয়ে দিলেও এএসআই আনারুল তাদের ধরতে এগিয়ে যাননি। পুলিশসহ তাদের দেখে ছিনতাইকারীরা ধীরে ধীরে সরে যায়। পরে এএসআই আনারুল ভুক্তভোগীকে জানান, রাতে অভিযান চালানো হবে এবং তাদের বাসায় চলে যেতে বলেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা ভুক্তভোগীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশ এ বিষয়ে কঠোর। এরই মধ্যে মোহাম্মদপুর থানার দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজ করা হয়েছে।