মাতৃবাংলা /নিজস্ব প্রতিবেদন
গাজীপুর সদর হাসপাতাল থেকে হয়েছে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। নগর ও জেলায় বসবাসরত ৩০ লাখ মানুষের বেশিরভাগই এ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। বাড়ছে হাসপাতালের অবকাঠামো। কেনা হয়েছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। তবু এর চিকিৎসা সেবা নিয়ে রয়েছে অনেক অভিযোগ। একটু জটিল রোগী হলেই রেফার্ড করা হয় ঢাকার হাসপাতালে। কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিতে বছরের পর বছর ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে থাকে সরকারি অর্থে কেনা কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা আর চিকিৎসক-কর্মচারী ও যন্ত্রপাতির সংকটসহ নানা কারণে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ, কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নানা অনিয়মে একটি চক্র জড়িত রয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। যদিও হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, জনবলের সংকট থাকায় হয়তো কাঙ্ক্ষিত সেবা কখনো কখনো দেয়া যাচ্ছে না, তবে কেনা-কাটা বা অন্যকোনোভাবে কোনো ধরনের অব্যবস্থাপনা অনিয়ম বা দুর্নীতি নেই এই হাসপাতালে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালটি মেডিকেল কলেজে রূপান্তর করার পর রোগীর সংখ্যা বেড়েছে অনেক। মেডিকেল কলেজে উন্নীত হলেও কিছু সুবিধা ছাড়া অনেক কিছুই চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মতো। কাগজে কলমে ৫০০ শয্যা থাকলেও ওয়ার্ড রয়েছে অর্ধেকেরও কম। অনেক বেড রয়েছে বারান্দায়, অনির্ধারিত রুমে। বেশি রোগী হলে তাদের জায়গা হয় বারান্দায়, ফ্লোরে। অথচ খাবার সরবরাহ ও মালামাল কেনা-কাটা হয় ৫০০ শয্যার হাসপাতালের মতো। এই হাসপাতালে একটু জটিল রোগী আসলেই রেফার্ড করা হয় ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। ইমার্জেন্সি অপারেশন হয় না। ২৪ ঘণ্টা এক্সরে ও সিজার করানো হয়না। সব ধরনের প্যাথলজি টেস্ট করা হয় না। হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মতো রোগীদের ব্লাড, সুগার, বিলুবিরিন, ক্রিটেনিন, ইউরিয়া, সুগারসহ মাত্র ৬-৭ ধরনের প্যাথলজি করা হয়। যেখানে কমপক্ষে ২০ ধরনের প্যাথলজি টেস্ট হয়ে থাকে এই ধরনের অন্য হাসপাতালে। নামেমাত্র আলাদা শিশু ইউনিট থাকলেও শিশুদের আলাদা রেখে চিকিৎসা দেয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। স্কিনটেকের জন্যে ক্রায়োসার্জারি মেশিন নেই, মাত্র ৩-৪ লাখ টাকার একটি মেশিন কিনলেই সেবা পেতে পারে হাজার হাজার রোগী। ইএনটি বিভাগে সাধারণ টনসিল অপারেশন ছাড়া জটিল অপারেশন করার যন্ত্রপাতি নেই।